একটা বহুল শোনা কথা অন্তত মাদকাসক্ত ব্যাক্তিদের ক্ষেত্রে, মাদক বর্জনের জন্য ইচ্ছাশক্তি যথেষ্ট হ্যা ঠিক আছে কারন ইচ্ছা না থাকলে মাদক বর্জন করা যায় না। কিন্ত মুল বিষয়টা হলো মাদকাসক্তির চিকিৎসা নেবার পর ওইব্যাক্তি ক্যানো পুনরায় মাদক গ্রহণ করলো, এর কারন হিসাবে দুইটি বিষয় পরিলক্ষিত হয়

১.সহ আসক্তির প্রভাব.

২. মাদকাসক্ত ব্যাক্তির চিকিৎসা ও সুস্থতা সম্পর্কে ভ্রান্ত বিশ্বাসের কারনে।

প্রথমে আসি সহ আসক্তি বা কো এডিকশন এর বিষয়টি

কো এডিকশন ও পুনঃ পতনের সম্পৃক্ততা

আমরা যারা মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনবার্সন এর সাথে জরিত তারা প্রায়শই ক্লায়েন্টের পরিবারকে বোঝাতে ব্যার্থ হই,
একজন আসক্ত ব্যাক্তি চিকিৎসার পরবর্তিতে পুনঃ পতনের সাথে পরিবারের একটা বিশাল ভুমিকা রয়েছে।

এর ফলে একজন রিকোভারী সুস্থতার কর্মসূচী অনুসরণ করা সত্বেও,
সে শুধুমাত্র পরিবারের অজ্ঞতা বা গোড়ামী অনেক সময় শুধুমাত্র নিজেরদের আবেগ ও সুবিধার জন্য বলির পাঠা হয় এবং পুনরায় মাদকের কাছে ফিরে যায়।

হর হামেশা একটা শব্দ আমাদের মাঝে প্রচলিত

“ কো- এডিকশন বা সহ আসক্তি “

সহ আসক্তি শব্দটি একটা সময় শুধুমাত্র স্বামী স্ত্রীর মাঝে অবস্থা বোঝানো হত,
আর পরিবারের বাকী সদস্যদের ক্ষেত্রে আলাদা শব্দ দিয়ে নির্নয় করা হত।
কিন্ত আমাদের দেশে মাদক দ্রব্য ব্যাবহারের ধরন , আর্থ সামাজিকতার পরিপ্রেক্ষিতে সহ আসক্ত বলতে পরিবারের যে কোন সদস্যকে বোঝানো হয়।

যারা আসক্ত ব্যাক্তির সাথে প্রতিশ্রতিব্ধ জীবন যাপনের কারনে তাদের মানসিক অবস্থা অনেক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে পরেছে।
সহ- আসক্তি হল কতগুলি নিরুপনযোগ্য লক্ষনের সমিষ্টি যা মুলতঃ খুবই দীর্ঘস্থায়ী এবং সুস্পষ্ট ক্রমোন্নতি অনুসরণ করে চলে।
তারা আসক্ত ব্যাক্তি সম্পর্কে অনেক চিন্তাধারা ও তার সাথে ব্যাবহারে ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে যায়।

আমাদের দেশে প্রায় সকল ক্ষেত্রে একজন আসক্ত ব্যাক্তিকে চিকিৎসার জন্য পরিবারের সবাই সহযোগিতা করে,
কিন্ত সমস্যা হয়ে দাড়ায় পরিবারের সদস্যরা অস্বীকার করে যে আসক্তি একটি পারিবারিক অসুস্থতাও বটে বেশির ভাগ আসক্ত ব্যাক্তির পরিবারের সদস্যরা এই সত্যকে মেনে নেয় না তাদের মধ্যে যে পারিবারিক অসুস্থতা বিদ্যমান তার জন্য বিশেষায়িত চিকিৎসা দরকার।

এবং আসক্ত ব্যাক্তির সাথে প্রতিশ্রতিবদ্ধ জীবন যাপনকারী অনান্য সদস্যদের চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে সেটা কাউন্সিলিং বা অন্য যে কোন ধরনের মোটিভেশনাল বা মেডিসিনাল চিকিৎসা।

কিন্ত অবস্থা ঘোলাটে হয় তখনই পরিবারের সদস্যরা নিজের বিষয়ে উদাসিনতো বটেই উপরন্ত নিজেদের নিজেদের ও পারিবারিক সমস্যার কারনে আসক্ত ব্যাক্তিকে বলির পাঠা বানায়।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় আসক্তি সম্পর্কে অজ্ঞতা নিজেদের গোড়ামী বা ভুল আবেগের কারনে চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে তাদের পারিবারিক দোহাই দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের পুর্বে বাড়িতে নিয়ে যায়।

একটা সময় সুস্থতা সম্পর্কে হালকা ধারনাকারী একজন রিকোভারী পারিপার্শিক পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে সমস্যা হয়, কিন্ত পরিবারের সদস্যরা আসক্ত ব্যাক্তির নিয়ে তার ও পরিবারের জীবন উন্নত ও আদর্শ হয়ে ওঠার অবাস্তব স্বপ্ন দেখে।

এখানে আসক্ত হোক সে স্বেচ্ছায় বা তাকে ধরে এনে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে,
সে ব্যাক্তি যখন তাদের স্বপ্ন বাস্থবায়ন করতে পারে না তখন পরিবারের অনান্য সদস্যরা ওই আসক্ত ব্যাক্তিকেই দোষারপ করতে থাকে।
তাদের এসব আচারন উক্ত সুস্থতাগামী ব্যাক্তির মানসিক বিভ্রান্তি তৈরি করতে থাকে এবং সুস্থতা এগিয়ে নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে জটিল বাধার সৃষ্টি করে।

এই সকল বিষয়গুলো সুস্থতাগামী আসক্ত ব্যাক্তির পুনঃ পতনকে ত্বরান্বিত করে। অনেক সময় দেখা যায় একজন রিকোভারী বেশ ভালোভাবে সুস্থতার কর্মসূচী অনুসরণ করা সত্বেও শুধুমাত্র সহ আসক্তির কারনে তার পুনঃ পতন ঘটে।

অথচ পরিবারে অনন্য সদস্যরা ইচ্ছা করলেই পুনঃ পতনের প্রতিরোধ পরিকল্পনার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে আসক্ত ব্যাক্তির সুস্থতার জন্য সহায়ক হতে আরো বেশি সহায়ক হতো।

বিস্তারিত জানতে

By newneer

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *